লবণাক্ত পানি পানে উপকূলের নারীদের জরায়ু সংক্রমণ বেড়েছে। উপকূলের ৭৩% মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের উপকূলের ১৯ জেলার ৩ কোটি মানুষ আধারযোগ্য পানি সংগ্রহ করতে পারে না। দেড় কোটি মানুষ ভূগর্ভস্থ লবণাক্ত পানি পানে বাধ্য হচ্ছেন। উপকূলীয় অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টায় মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে পশুর নদীর পাড়ে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে খালি কলস হাতে নিয়ে মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন।
পশুর রিভার ওয়াটারকিপার পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ’র সভাপতিত্বে উপকূলীয় নরীদের অংশগ্রহণে এ মিছিল এবং সমাবেশের আয়োজন করে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকপার।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর নেত্রী কমলা সরকার, সার্ভিস বাংলাদেশ’র সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র হাছিব সরদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার চন্দ্রিকা মন্ডল, রত্না শেখ, তন্বী মন্ডল প্রমূখ।
সভাপতি বক্তৃতায় পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, আমরা পরিস্কার এবং নিরাপদ পানির হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা লড়াই করছি পানীয় উপযোগী, মাছের বসবাসের উপযোগী এবং গোসল করার উপযোগী পানির জন্য।
তিনি আরও বলেন, পানির আরেক নাম জীবন তাই জরুরি ভিত্তিতে উপকূলের সুপেয় পানির সংকটের সমাধান করতে হবে। পানি সংরক্ষণের অবকাঠামো নির্মাণ এবং পানি সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
ধরা’র নেত্রী কমলা সরকার বলেন, মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে খাবার পানি নারীকেই সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নারীর শ্রমঘন্টা। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র থেকে ভূভাগের অনেক ভিতর পর্যন্ত লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। লোকজনকে পানি ও খাবারের সাথে তুলনামূলক বেশি পরিমাণে লবণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে। লবণাক্ত এলাকায় গর্ভবতী মায়েদের প্রি-একলেম্পশিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের হার বেড়েছে।
পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার রত্না শেখ বলেন, উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই সমাধান করতে হবে। মিঠা পানির উৎস ভরাট, দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ পানির সার্বজনীন, ন্যায্যতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। সমবেশের আগে পশুর নদীর পাড়ে খালি কলস হাতে নিয়ে উপকূলীয় নারীরা মিছিল করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম